মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৪ অপরাহ্ন
নাইমঃ নওগাঁর পোরশা উপজেলার ছাওড় ইউনিয়নের নোনাহার আদিবাসী পাড়ার বিকেলের শান্ত বাতাস যেন হঠাৎই থমকে দাঁড়ায় আগুনের লেলিহান শিখায়। শ্রী নরেন কুজুরের খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট কুঁড়ে ঘর—যে ঘরটিই ছিল তার আর ভাই রুপেন কুজুরের বহু বছরের স্মৃতি—দুর্বৃত্তের হাতের আগুনে মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায়। জমিতে কাজ করতে যাওয়া মানুষের ফাঁকা বাড়ির সুযোগ নিয়ে কে বা কারা ঘরে আগুন ধরিয়ে পালায়। গ্রামবাসীরা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ঘরের ভেতর থাকা জামা–কাপড়, আর শার্টের পকেটে রাখা নগদ টাকা মিলে প্রায় ৪৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়ে যায়।
নরেন কুজুরের অভিযোগ—তিন দশকের জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ মো. নুরুজ্জামান, নূর মোহাম্মদ ও মো. নাসিম দীর্ঘদিন ধরে নানা হুমকি–ধামকি দিয়ে আসছিল। আর সেই সুযোগেই সুকৌশলে আগুন দিয়ে ক্ষতি সাধন করা হয়েছে বলে তার সন্দেহ। ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তিনি পোরশা থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান—এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন।
ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রংপুর জাতীয় আদিবাসী পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি বিমল খালকো, নওগাঁ জেলা জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি নকুল পাহান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার মুন্ডা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক টুনু পাহানসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচারের দাবিতে কঠোর ভাষায় দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
এই আগুন শুধু একটি কুঁড়ে ঘর পোড়ায়নি—পোড়িয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা আর ন্যায়ের প্রতি আস্থা। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসনের পদক্ষেপ কত দ্রুত এ আগুনের ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে।