বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
তুষারপাত ও শৈত্য প্রবাহ থেকে জীবন বাঁচাতে নিজ দেশ ত্যাগী হয়েও মৃত্যুর মুখে পড়তে হচ্ছে অতিথি পাখিদের। এ যেন মরার উপর খারার ঘাঁ। শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তুষারপাত ও শৈত্য প্রবাহ থেকে নিজেদের রক্ষার হাজার হাজার মাইল আকাশ পথ পাড়ি দিয়ে প্রতি বছরেই আসে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলা পোরশা উপজেলা এখানে এসেও জীবনের নিরাপত্তা পাচ্ছে না অতিথি পাখিরা।
প্রতিদিনেই নিতপুর স্থানীয় শিকারিরা পাখি শিকার করে বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছে। নওগাঁ জেলা পোরশা উপজেলার প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ও ভারতের পূর্ণভবা বয়ে গেছে।
নওগাঁ জেলা পোরশা উপজেলা নিতপুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দাগণ জানায়, শিকারিরা বিভিন্ন ধরনের কারেন্ট জাল ও ফাঁদ দিয়ে পাখি শিকার করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইননুসারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পোরশা উপজেলা সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পোরশা উপজেলার কৃষক কামাল মিয়া জানান, বাড়িতে রাতে ঘুমানোর আগে আকাশে পাখিদের উড়ার শো শো শব্দ এখন আর শোনা যায় না। কারণ এবার পাখি কম এসেছে। এর মধ্যেই পাখি শিকার হচ্ছে। আগে বোরো জমির চারা রোপণ করে পাখি পাহারা দিতে হতো, এখন এমন হয় না। পাখি শিকারিরা রাতে বিভিন্ন জাতের পাখি শিকার করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৃথিবীতে প্রায় ১০ হাজার প্রজাতির পাখির মধ্যে এক হাজার ৮৫৫ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। পোরশা প্রায় ২১৯ প্রজাতির পাখির অবস্থান ছিল। এর মধ্যে ৯৮ প্রজাতির পরিযায়ী, ১২১ প্রজাতির দেশি। ২২ প্রজাতির হাঁসজাত পাখির বিচরণ করত। আগত পাখির মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল- বিরল প্রজাতির প্লাভীহাঁস, পিয়ারী, কাইম, রামকুড়া, মাথারাঙ্গা, বালিহাঁস, লেঞ্জা, চাহা,চোখাচোখি, বেগুনি কালেম প্রভৃতি। এখন এসব পাখি নেই বললেই চলে।
এর কারণ হিসেবে তারা জানান, এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারি ও পাখি ব্যবসায়ীরা নির্বিচারে নিধনের কারণে দিন দিন এই পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁ জেলা পোরশা উপজেলা নানান প্রজাতির জলাবন, হিজল কড়চ, নলখাগড়া বিলুপ্তি, ইঞ্জিন চালিত মেশিনের শব্দ এবং রাতের আধারে মাছ ধরার জালসহ বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ দিয়ে অতিথি পাখি শিকার করাও অন্যতম কারণ।
পরিবেশবিদগণ বলছেন, জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা, পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। না হলে নওগাঁ জেলা পোরশা উপজেলার সৌর্ন্দয হারাবে অচিরেই।